ফোন +৮৮০১৭১১২৬৭৫৩১
ইমেইল : [email protected]
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। পিতার দিক থেকে বিখ্যাত বীর তৈমুর লঙ এবং মাতার দিক দিয়ে চেঙিস খানের সরাসরি বংশধর। অর্থাৎ জন্মসূত্রেই তিনি ছিলেন বীর ঘরানার।
যার কথা বলছিলাম,তিনি ইতিহাসে বাবর নামে পরিচিত। প্রকৃত নাম মির্জা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। তার পিতার নাম মির্জা ওমর সাইখ বেগ এবং মাতার নাম কুলতুক নিগারা খানাম।পিতা ছিলেন ফারগানার (বর্তমান উজবেকিস্থান) শাসনকর্তা।সাহসী এই যোদ্ধা তার জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন বিভিন্ন যুদ্ধের ময়দানে।
জমি পরিমাপ পদ্ধতিঃ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
সম্রাট বাবর ১৪৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী ফারগানায় (বর্তমান উজবেকিস্তান) জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন শক্তিশালী ও সুঠাম দেহের অধিকারী ।কথিত আছে, তিনি তার দুই কাধে দুই জন মানুষ নিয়ে খাড়া ঢাল বেয়ে নামতে পারতেন। এছাড়াও জনশ্রুতি রয়েছে বাবর তার সামনে পড়া সকল জলাশয় সাঁতরে পাড়ি দিয়েছিলেন। এমনকি যমুনা নদীও দুইবার সাতরে পার হয়েছেন। তার এই শক্তির কারণে তাকে সবাই বাবর (ফার্সিতে বাঘ) বলে সম্মোধন করতেন।
১৪৯৪ সালে পিতার হঠাৎ মৃত্যুর পর মাত্র ১২ বছর বয়সে ফারগানার সিংহাসনে আসীন হন বাবর। শিকার হন জ্ঞাতি চাচাদের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের। তবু্ও কিছু বিশ্বস্ত মানুষের সহায়তায় টিকে থাকেন সিংহাসনে।ছোট বেলা থেকেই বাবুরের স্বপ্ন ছিল পূর্বপুরুষ তৈমুর লঙ এর রাজ্য সমরকন্দ দখলের।
১৪৯৮ সালের দিকে সমরকন্দের শাসকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়। এ সুযোগে বাবর সমরকন্দের উজবেক আক্রমণ করেন। দীর্ঘ সাত মাস অবরোধের পর তিনি সমরকন্দ এর দখল নিতে সমর্থ হন। কিন্তু এই সময় ফারাগানায় বিদ্রোহ দেখা দেয় এবং ফারগানা বাবরের হাতছাড়া হয়ে যায়। আবার ফারগানার বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে সমরকন্দেরও দখল হারান। যার ফলে পরবর্তীতে বেশ কিছু দিন বাবরকে ভবঘুরে জীবন যাপন করতে হয়।
ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
১৫০১ সালে বাবর কিছু সৈন্য সমাবেশ করে আবার সমরকন্দ আক্রমণ এর পরিকল্পনা করেন।এসময় সমরকন্দের শাসক ছিলেন পরাক্রমশালী মোহাম্মদ শেবানী খান। বাবর এ যুদ্ধে পরাজিত হন এবং কোন মতে প্রান বাঁচিয়ে পালাতে সমর্থ হন। পরবর্তীতে সম্রাট বাবর পুনরায় একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী তৈরিতে মনোনিবেশ করেন।
১৫০৪ সালে বাবর তুষার সমৃদ্ধ অঞ্চল হিন্দুকুশ অতিক্রম করেন এবং বিক্ষোভরত আফগানিস্তানে আক্রমণ চালিয়ে সহজেই কাবুল দখল করে নেন।এসময় তিনি বাদশাহ উপাধি গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে ১৫১০ সালে মোহাম্মদ শেবানী খান পার্সিয়ার সম্রাট ইসমাইল সাকাভিদ এর নিকট নিহত হন।বাবর আবারও তার হারানো রাজ্য সমরকন্দ দখলের চিন্তা করেন এবং ইসমাইল সাকাভিদ এর সাথে মিত্রতা গড়ে তোলেন।
১৫১১ সালে বাবর ১০ বছর পর আবার সমরকন্দ অধিকার করেন।এর দশ মাস পর উজবেক দখল করেন।কিন্তু ভাগ্য এবার ও তার সহায় ছিল না।কিছু উজবেক সৈন্যদের বিরোধিতায় আবার তাকে হারাতে হয় সমরকন্দ।মূলত এরপর থেকেই বাবর ভারতীয় উপমহাদেশ জয়ের পরিকল্পনা করেন।তিনি বাবুরনামাতে লিখেছেনএ বিষয়ে।
বাবর বলেছিলেন,” কাবুল জয় করার পর এখনো পর্যন্ত (১৫১৭) আমি হিন্দুস্থান দখলের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করি। কখনো আমার আমীরদের বিরুদ্ধাচরণ এবং আমার ভাইদের বিদ্রোহের জন্য বাধাপ্রাপ্ত হই। অবশেষে সব বাধা অতিক্রম করে আমি ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে একটি সেনাবাহিনী নিয়ে বাজাউর ও সোয়াত অভিমুখে রওনা হই এবং সেখান থেকে ঝিলাম নদীর পশ্চিম তীর পর্যন্ত অগ্রসর হই”
দলিল কি? ,দলিল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
১৫২২ সালে অধিকার করেন কান্দাহার।
১৫২৪ সালে আফগানদের হারিয়ে লাহোর দখল করে নেন এবং ঝিলম ও চেনাব নদী অতিক্রম করে পাঞ্জাবের দিরালপুর দখল করেন।এসময় দিল্লির শাসনকরর্তা ছিলেন সিকান্দার লোদির পুত্র ইব্রাহিম লোদি।ইব্রাহিম লোদি বাবরের সামনে নিজের মাথা নত করেন নি। ফলে বাবরের আগ্রাসনের জন্য ইব্রাহিম লোদির সাথে যুদ্ধ ছিল অনিবার্য।
১৫২৬ সাল,ঐতিহাসিক পানিপথ এর যুদ্ধে মুখোমুখি হন বাবর ও ইব্রাহিম লোদি। ইব্রাহিম লোদির ১ লক্ষ সৈন্য ও এক হাজার হাতির বিপরীতে বাবরের মাত্র ২০ হাজার সেনা অংশগ্রহণ করে।তবুও এই যুদ্ধে কৌশলগত কারণে জয়লাভ করেন বাবর।উপমহাদেশে প্রথম বাবর কামান ব্যাবহার করেন এই যুদ্ধে।এই যুদ্ধে জয়লাভের পর দিল্লি ও আগ্রাতে স্থায়ীভাবে গোড়াপত্তন হয় মুঘল সাম্রাজ্যের।
পানিপথের যুদ্ধে জয়লাভের পর বাবর মূলত দিল্লি ও আগ্রা অধিকার করেন।ভারতবর্ষে তখনো বেশ কিছু পরাক্রমশালী রাজপুতরা ছিলেন যারা বাবরের বশ্যতা স্বীকার করেন নি।এছাড়াও ছিল কিছু বিদ্রোহী আফগান নেতা।রাজপুত দের মধ্যে নেতা ছিলেন রাণা সংগ্রাম সিংহ। বাবরের বিরুদ্ধে ছোট ছোট রাজ্যের রাজপুতেরা রাণা সংগ্রাম সিংহের নেতৃত্বে একজোট হন। অবশেষে খানুয়ার প্রান্তরে মুখোমুখি হন বাবর ও রাণা সংগ্রাম সিংহ।
জমি ক্রয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
১৫২৭ সালের এই যুদ্ধে রাণা সংগ্রাম সিংহের বিশাল সেনাবাহিনী আবারও বাবরের যুদ্ধ কৌশলের নিকট পরাজিত হয়।চূর্ন হয়ে যায় রাণা সংগ্রাম সিংহের সকল দম্ভ।এ বিজয়ের ফলে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সুলতান মাহমুদ লোদি দিল্লির মসনদের জন্য কিছু রাজপুত ও বিদ্রোহী আফগানদের সমন্বয়ে বাবর এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং পরাজয় বরন করেন যা ইতিহাসে ঘঘরার যুদ্ধ নামে পরিচিত।১৫২৯ সালে এই যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এই যুদ্ধের পর ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য বিরোধী সকল শক্তির বিনাশ ঘটে এবং মুঘল সাম্রাজ্য চূড়ান্ত স্থায়িত্ব অর্জন করে।
এই সময় বাবরের প্রিয় পুত্র হুমায়ুন অসুস্থ হয়ে পড়েন।দিন দিন তার অসুস্থতা বেড়েই চলছিল।কথিত আছে,এমন সময় বাবর আল্লাহর কাছে তার নিজের জীবন পুত্রের জীবনের জন্য উৎসর্গ করেন।ক্রমান্বয়ে এরপরেই বাবর এর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে।
অবশেষে ১৫৩০ সালে এই বীর সেনা মৃত্যুবরন করেন।বাবর তার ৪৭ বছরের জীবনের বেশিরভাগ সময়েই ছিলেন কোন না কোন যুদ্ধক্ষেত্রে।
গেটনোট একটি প্লাটফরম যা চাকরির পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আপনাকে একধাপ এগিয়ে থাকতে আপনার সহায়ক হবে। আপনার প্রস্তুতিকে করে তুলবে আরও শাণিত। বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেলেই আমরা বাজারে নতুন মলাটে কিছু পুরানো বই দেখতে পাই....
© ২০১৯-২০২০ সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত NxtOrb দ্বারা।
গেটনোট একটি প্লাটফরম যা চাকরির পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আপনাকে একধাপ এগিয়ে থাকতে আপনার সহায়ক হবে। আপনার প্রস্তুতিকে করে তুলবে আরও শাণিত। বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেলেই আমরা বাজারে নতুন মলাটে কিছু পুরানো বই দেখতে পাই....
© ২০১৯-২০২০ সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত NxtOrb দ্বারা।