ফোন +৮৮০১৭১১২৬৭৫৩১
ইমেইল : [email protected]
কারো সম্পত্তির উত্তরাধিকার কে হবেন, সম্পত্তির বণ্টন কীভাবে হবে ইত্যাদি বিষয় উত্তরাধিকার আইনে উল্লেখ থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে উত্তরাধিকার হল মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্তানাদি ও আত্মীয় স্বজনের তাঁর সম্পত্তির উপর অধিকার। অর্থাৎ, কোনো নারী বা পুরুষের মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে মৃতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের খরচ, দেনাশোধ বা মৃতব্যক্তি যদি কোন উইল সম্পাদন করে যান তবে তা হস্তান্তরের পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে তার উপর মৃতের সন্তান সন্তানাদি ও আত্মীয় স্বজনের যে অধিকার জন্মায়, তাকে উত্তরাধিকার বলে৷
জমি পরিমাপ পদ্ধতিঃ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
এখনো একেবারেই পারিবারিক পরিমন্ডলেই বিচার হয়৷ তাই এর জন্য রয়েছে পারিবারিক আইন৷ তবে এই আইন একেক ধর্মের জন্য একেক রকম৷
কোন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির বন্টনযোগ্য অংশ মৃত ব্যক্তির ধর্মীয় ব্যক্তিগত আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। আমাদের দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য “মুসলিম উত্তরাধিকার আইন” হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য “হিন্দু উত্তরাধিকার আইন” খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য “খ্রিস্টান উত্তরাধিকার আইন” দ্বারা উত্তরাধিকার নির্ধারিত হয়।
বিভিন্ন ধর্মে উত্তরাধিকার আইন
বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য প্রায় সব ধর্মাবলম্বীর, এমনকি আদিবাসীদেরও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধি-বিধান আছে৷ যেমন, মুসলিমদের জন্য আইনটি কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী তৈরি৷ আবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আইন আলাদা৷ সময়ে সময়ে কিছু কিছু আইন সংস্কারও করা হয়েছে৷
(১) মুসলিম উল্টারাধিকার আইনঃ
ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি এবং আত্নসমর্পণ। আল্লাহর ইচ্ছার উপর আত্নসমর্পণই ইসলাম এবং পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনই ইসলামের লক্ষ্য। আরবি আসসালামা শব্দ থেকে ইসলাম ও মুসলিম শব্দের উৎপত্তি। ইসলামের বাণীতে বিশ্বাসী ব্যক্তি মুসলমান।
মুসলিম আইনের উৎসঃ মুসলিম আইনের উৎস হলো-
(ক) কোরআন: সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর নাযিলকৃত আল্লাহর বাণী বা ওহীর সমষ্টিই আল-কোরআন। আল-কোরআনে মোট ৬,৬৬৬টি আয়াত এবং ১১৪টি সুরা আছে। সূরাসমূহ মক্কী ও মাদানী নামে দুই ভাগে বিভক্ত। মাদানী সূরাসমূহে ইসলামী উত্তরাধিকার আইন-এর নির্দেশাবলি ও উপদেশ বর্ণিত হয়েছে। মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূল উৎস্য হচ্ছে আল-কোরআন।
(খ) সুন্নাহ: সুন্নাহ শব্দের অর্থ অনুসৃত পথ। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর মুখ নিঃসৃত বাণী অর্থাৎ তাঁর কথা, কর্ম ও তাঁর সম্মুখে কৃত কোন কর্মের মৌন সম্মতিই হচ্ছে সুন্নাহ। সুন্নাহসমূহের পরিভাষাগত অর্থ হচ্ছে হাদিস। আরবিতে পূর্ব বর্ণিত তিনটি বিষয়কে হাদিস কওলী, ফেলী ও তাকরীরি বলা হয়। রাসূল (সাঃ)-এর তিরোধানের পর হাদিস সংকলণ করা হয়। বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থের সংখ্যা ৬টি-বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজা শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজা শরীফ, নাসায়ী শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ। তাদেরকে একত্রে সিয়া সিত্তাহ বলা হয়।উত্তরাধিকার সূত্রে মুসলমানদের সম্পত্তি প্রাপ্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।
ফ্লাট বা প্লট সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
(গ) ইজমা: ইসলামী চিন্তবিদ ও দার্শনিকগণ কোন সময়ে একমত পোষণ করলে বা একমত হয়ে কোন সমস্যা সমাধানে উপনীত হলে তাকে ইজমা বলে। অর্থাৎ কোন বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের পর কোন সমস্যা সমাধানে ইজমার সাহায্য গ্রহণ করা যায়। ইজমার মাধ্যমে সম্পত্তি নিষ্পত্তির নজির রয়েছে।
(ঘ) কিয়াস: কিয়াস অর্থ হচ্ছে আংশিক একমত হওয়া বা যুক্তিসংগত অনুমান করা। কোরআন, হাদিস, ইজমার পর কোন সমস্যার সমাধানে কিয়াসের সাহায্য গ্রহণ করা হয়।
মুসলিম আইনের প্রয়োগঃ
বাংলাদেশে সকল মুসলিম আইন কোর্ট কর্তৃক প্রয়োগ করা হয় না। ১৯৩৭ সালের শরিয়ত আইনের ২ ধারা অনুযায়ী যে ক্ষেত্রে পক্ষদ্বয় বা একপক্ষ মুসলিম তাদের জন্য কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মুসলিম আইন প্রযোজ। বিয়ে, দেনমোহর, তালাক, দান বা হেবা, অভিভাবকত্ব, ওয়াকফ, উইল, উত্তরাধিকার ও খোরপোশের ক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য মুসলিম আইন প্রযোজ্য। উল্লেখ্য যে, মুসলিম ফৌজদারি আইন এবং সাক্ষ্য আইন আমাদের দেশে মুসলমানদের জন্য প্রয়োগ করা হয় না।
অর্থাৎ উপরোক্ত বিষয়সমূহ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে মুসলমানসহ অন্যদের জন্য সাধারণ আইন প্রযোজ্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বর্তমান বিবাহ বিচ্ছেদ এবং অভিভাবকত্বের বিষয়ে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন ১৯৩৯, মেজরিটি এ্যাক্ট ১৮৭৫ এবং গার্জিয়ান ও ওয়ার্ডস এ্যাক্ট ১৮৯০ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের উত্তরাধিকার, বিবাহ, তালাক, দেনমোহর ও খোরপোশের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে।
কোরআনের সর্বমোট ৬৬৬৬টি আয়াত রয়েছে। তম্মধ্যে মাত্র ২০০টি আয়াত ইসলামী আইন সংক্রান্ত। আরো বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ৮০টি আয়াতে উত্তরাধিকার, বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ইত্যাদি সংক্রান্ত হুকুম নিষেধ রয়েছে।
বন্টনযোগ্য সম্পত্তিঃ
কোন মুসলমানের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে (ক) দাফন-কাফন ও মৃত্যুশয্যাকালীন খরচ (খ) মৃত্যুর তিন মাস পূর্ব পর্যন্ত সময়ের সেবা-শুশ্রুষার খরচ (গ) ঋণ (ঘ) উইল বা উইলের খরচ, এবং (ঙ) প্রবেট বা সাকসেশন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত ব্যয় পরিশোধের পর যে সম্পদ থাকে তা মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী ওয়ারিশগণের মধ্যে বন্টিত হবে।
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী ওয়ারিশঃ
মুসলিম আইন অনুযায়ী ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার তিন শ্রেণিতে বিভক্ত।
(ক) শেয়ার আ অংশীদার (যাবিল ফুরুজ): কোরআনের যাদের অধিকার নির্ধারিত করে দেওয়া আছে, যেমন-কন্যা, মা,বাবা,দাদা,দাদী,স্বামী/স্ত্রী ইত্যাদি।
অংশীদার কে কেঃ ১২ জন অংশীদার রয়েছে তারা হচ্ছে-
১. পিতা ২. স্বামী ৩. স্ত্রী ৪. মাতা ৫. কন্যা ৬. দাদা ৭. দাদী ৮. ছেলের কন্যা ৯. বৈপিত্রের ভাই ১০.বৈপিত্রের বোন ১১. বোন। এদের মধ্যে প্রথম ৫ জন সকল সম্পত্তি পাবে, তারা প্রাথমিক উত্তরাধিকার, পরবর্তী তিনজন (৬-৮) পূর্ববর্তী ৫ জনের বিকল্প। সর্বশেষ চারজন (৯-১২) সন্তান ও পিতা থাকলে সম্পত্তি পাবে না (অংশীদারদের তালিকা)। প্রথম একজনের সম্পত্তি পাবার বিষয়ে পবিত্র কোরআন শরীফ সুস্পষ্ট নিদের্শনা আছে। ইসলামী চিন্তাবিদগণ কোরআন ও হাদিস পর্যলোচনাপূর্বক ফিকাস নীতি অনুসরণ করে তাদের তিনজনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
বিধি
জবিউল ফুরুজঃ
এদের অংশ পবিত্র কোরআন শরীফে নির্ধারণ করে দেয়া আছে। জবিউল ফুরুজ হল ১২ জন। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং বাকি ৮ জন মহিলা। ৪ জন পুরুষ হল – (১) স্বামী, (২) পিতা , (৩) দাদা , (৪) সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)। নির্ধারিত অংশের পরিমান নিম্নরূপঃ – (১) স্ত্রী , (২) কন্যা , (৩) পুত্রের কন্যা , (৪) মাতা, (৫) দাদি এবং নানি , (৬) সহোদর বোন, (৭) সৎ বোন (বৈমাত্রেয়), (৮) সৎ বোন (বৈপিত্রেয়)। নির্ধারিত অংশের পরিমান নিম্নরূপঃ
(১) স্বামী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
(২) স্বামী ১/২ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৩) স্ত্রী ১/৮ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
জমি ক্রয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
(৪) স্ত্রী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৫) কন্যা ১/২ পাবে যখন একজন মাত্র কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৬) কন্যা ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৭) কন্য অবশিষ্ট ভোগী হিসাবে পাবেন যখন এক বা একের অধিক পুত্র থাকে।
(৮) পুত্রের কন্যা পাবে ১/২ অংশ পাবে যখন একজন মাত্র পুত্রের কন্যা থাকে। যদি কোন পুত্র, পুত্রের পুত্র বা একের অধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা না থাকে।
(৯) পুত্রের কন্যা ২/৩ ভাগ পাবে যখন দুই বা ততধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং এবং একের অধিক কন্যা না থাকে।
(১০) পুত্রের কন্যা অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবেন। পুত্রের পুত্র না থাকলে সমান অংশ কা আইন অনুযায়ী।
(১১) পিতা ১/৬ অংশ পাবে পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।
(১২) পিতা ১/৬ অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন এক বা একরে অধিক কন্যা, পুত্রের কন্যা এবং পুত্রের পুত্র না থাকে।
(১৩) পিতা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।
(১৪) মাতা ১/৬ অংশ পাবে যখন পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং দুই বা ততধিক ভাই বোন এবং পিতা থাকে।
(১৫) মাতা ১/৩ অংশ পাবে যখন পুত্র অথবা পুত্রের পুত্র এবং একের অধিক ভাই বোন না থাকে।
(১৬) মা ১/৩ অংশ পাবে যখন স্ত্রী, স্বামী এবং বাবা থাকে। s
(১৭) দাদা ১/৬ অংশ পাবে যখন সন্তান এবং পুত্রের সন্তান থাকে এবং পিতা বা নিকটতম পিতামহ না থাকে।
(১৮) দাদা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে ১/৬ অংশ পাবেন যখন কন্যা অথবা পুত্রের কন্যা থাকে।
(১৯) দাদা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যদি দূরবর্তী কোন অংশিদার বা অকশিষ্ট অংশ ভোগী না থাকে।
(২০) দাদী ১/৬ অংশ পাবেন যদি কোন মাতা বা মায়ের দিকে দাদী না থাকে।
(২১) পূর্ণ বোন ১/২ অংশ পাবেন যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং যদি কোন সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা অথবা ভাই না থাকে।
দলিল কি? ,দলিল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
(২২) পূর্ণ বোন ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক বোন থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা ও ভাই না থাকে।
(২৩) বোন অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবে যখন পূর্ণ ভাই থাকে বা এক বা একাধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং বোনকে বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে এবং এক বা একাধীক কন্যাদের সহিত অবশিষ্ট ভোগী থাকে তারা কন্যাদের অংশ নেওয়ার পর অবশিষ্ট ভোগী হবে।
(২৪) বৈমাত্রীক বোন পাবে ১/২ অংশ যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
(২৫) বোন পাবে ২/৩ অংশ যখন দুই বা ততধিক বৈমাত্রীক বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
(২৬) বৈমাত্রীয় বোন পাবে ১/৬ ভাগ যখন একজন পূর্ণ বোন থাকে (বোন পাবে ১/২ এবং বৈমাত্রী বোন পাবে ২/৩, ১/২, ১/৬)।
(২৭) বৈমাত্রীয় বোন অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন কোন বৈমাত্রীয় ভাই, এক বা একাধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা এবং বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে।
(২৮) বৈমাত্রীয় ভাই ১/৬ অংশ পাবে যখন সুধু মাত্র একজন বৈমাত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান ও পিতা না থাকে।
(২৯) বৈপিত্রীয় ভাই ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
(৩০) বৈপিত্রীয় বোন ১/৬ অংশ পাবে সেখানে একমাত্র বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
(৩১) বৈপিত্রীয় বোন ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
আসাবা বা অবশিষ্টভোগীঃ
(১)। আসবা গণের চারটি শ্রেণী আছেঃ
শ্রেণী (১): (১)) পুত্র , (২))কন্যা , (৩))পুত্রের পুত্র, (৪)) পুত্রের কন্যা
শ্রেণী (২): (১))পিতা , (২))দাদা
শ্রেণী (৩): (১))সহোদর ভাই, (২)) সহোদর বোন, (৩))সৎ ভাই (বৈমাত্রেয়), (৪))সৎ বোন (বৈমাত্রেয়), (৫))সহোদর ভাইয়ের পুত্র, (৬))সৎ ভাই(বৈমাত্রেয়)-এর পুত্র, (৭))সহোদর ভাইয়ের পুত্রের পুত্র , (৮)) সৎ ভাই(বৈমাত্রেয়)-এর পুত্রের পুত্র ।
জমি পরিমাপের সূত্রাবলিঃ সহজ এবং আধুনিকতম পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
শ্রেণী (৪): (১))চাচা, (২))চাচা (বৈমাত্রেয়), (৩))চাচাতো ভাই, (৪))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়), (৫))চাচাতো ভাইয়ের পুত্র, (৬))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়) এর পুত্র , (৭))চাচাতো ভাইয়ের পুত্রের পুত্র, (৮))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়)এর পুত্রের পুত্র
(২)। শুধুমাত্র পুরুষ অথবা মহিলা আসাবা হিসাবে থাকলে, অবশিষ্টাংশের সম্পুর্ণ অংশ পুরুষ অথবা মহিলা পাবেন, কিন্তু একই শ্রেণীর পুরুষ ও মহিলা একত্রে আসাবা হিসাবে থাকলে, পুরুষ ও মহিলাগণ ২:১ অনুপাতে অবশিষ্টভোগী হবেন।
সম্পত্তি বণ্টন প্রক্রিয়াঃ
ধাপঃ (১) – প্রথমে সম্পত্তি জবিউল ফুরুজ দের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে।
ধাপঃ (২) – জবিউল ফুরুজ দের অংশ সমূহ যোগ এর পরে সম্পূর্ণ অংশটি ১ এর চেয়ে বেশী হলে, সকল অংশ আনুপাতিক হারে কমে আসবে যাতে সম্পূর্ণ অংশটি ১ হয়।
ধাপঃ (৩) – যদি কোন আসাবা না থাকেন এবং সম্পূর্ণ অংশ ১ এর চেয়ে কম হলে স্বামী স্ত্রী এর অংশ ছাড়া জবিউল ফুরুজ অংশ সমূহ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে যাতে মোট অংশটি ১ হয়। স্বামী/স্ত্রী এর অংশ কঠিনভাবে সুনির্দিষ্ট করা।
ধাপঃ (৪) – আসাবা থাকলে অবশিষ্ট অংশ আসাবাগন পাবেন নিম্নের ক্রম অনুযায়ী পাবেনঃ
ধাপঃ (১) >ধাপঃ (২)>ধাপঃ (৩)>ধাপঃ (৪)
(শ্রেণী ১ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন ,শ্রেণী ২ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন; এভাবে চলতে থাকবে)
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন
এখানে দুই ধরনের উত্তরাধিকার পদ্ধতি চালু আছে – মিতক্ষরা ও দায়ভাগ পদ্ধতি৷ বাংলাদেশে দায়ভাগ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়৷ এ আইন অনুযায়ী, যারা পিণ্ডদানের অধিকারী, তারাই যোগ্য উত্তরাধিকারী৷ পিণ্ডদানের অধিকারীদের তালিকায় থাকা ৫৩ জনের মধ্য পুত্র, পুত্রের পুত্র, পুত্রের পুত্রের পুত্র, স্ত্রী, পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের পুত্রের স্ত্রীর পরে কন্যা আসেন৷ এই আইনের সংস্কারের দাবি বহুদিনের৷
বৌদ্ধ উত্তরাধিকার আইন
বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী হিন্দু আইন অনুযায়ী তাদের উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে থাকে৷
খ্রিষ্টান উত্তরাধিকার আইন
আমাদের দেশে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রিত হয় সাকসেশন অ্যাক্ট ১৯২৫-এর মাধ্যমে৷ কোনো মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী হওয়ার ক্ষেত্রে ছেলে এবং মেয়ে একই মর্যাদার অধিকারী, অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তারা সমান অংশ লাভ করে৷ তবে মৃত ব্যক্তি যদি সম্পত্তি অন্য কারো নামে উইল করে যান, তাহলে সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টিত হবে না৷
নৃ-গোষ্ঠীদের উত্তরাধিকার আইন
বেশিরভাগ নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রথা অনুযায়ী নারীদের পিতা-মাতা ও স্বামীর সম্পদের মালিকানায় উত্তরাধিকারের কোনো পদ্ধতি নেই৷ এ কারণে এ নারীরা সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷ পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের সংশোধনী পাস হওয়ার পরও নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা আদৌ কোনো সুফল পাবেন কিনা, তা নিয়ে তাদের মাঝে সংশয় আছে৷
হিজড়াদের উত্তরাধিকার
উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয় হিজড়াদের। অথচ এটি তাদের প্রাপ্য। অন্যান্য ধর্মের পারিবারিক আইনে হিজড়াদের সম্পর্কে কোনো কথা না থাকলেও ইসলামী আইনে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত বিধান রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শারীরিক গঠন ও আচরণে পুরুষালি স্বভাব বেশি থাকলে পুরুষ এবং নারী স্বভাব বেশি থাকলে নারী হিসেবে হিজড়াদের উত্তরাধিকার সম্পত্তি দেয়ার কথা বলা আছে।
লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যমান পরিবর্তন বাংলাদেশের পারিবারিক আইনে কী পরিবর্তন ফেলে?
এ ক্ষেত্রে দেখতে হবে, এভাবে লিঙ্গ পরিবর্তন কি আগে স্বাভাবিক ছিল, এমন কোনো ব্যক্তি মেডিকেল হরমোন পরিবর্তন ও সার্জিক্যাল অপারেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছে, নাকি হিজড়া থেকে সুস্থ হওয়ার উদ্দেশ্যে সম্পন্ন করেছে? স্বাভাবিক কেউ লিঙ্গ পরিবর্তন করলে তার ব্যাপারে কেমন বিধান প্রয়োগ হওয়া উচিত, তা বলা দুরূহ। তবে কোনো হিজড়া যদি এমনটি করে থাকে, তার পিতা-মাতার সম্পত্তিতে ছেলে সন্তান হিসেবে সম্পত্তির অধিকার অর্জনে তার কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কেননা শুরু থেকে তার মধ্যে কিছু মেয়েলি ভাব থাকলেও তার পুরুষ বৈশিষ্ট্যের অবসান পরিপূর্ণরূপে হয়নি। হিজড়া সমস্যাকে একটি ব্যাধি হিসেবে কল্পনা করলে সে চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করলে তাকে সাহায্য করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব।
সবশেষে বলা যায়, সুষ্ঠ ও ন্যায্যভাবে সম্পত্তির বণ্টন করা আইনগত, নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব।
গেটনোট একটি প্লাটফরম যা চাকরির পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আপনাকে একধাপ এগিয়ে থাকতে আপনার সহায়ক হবে। আপনার প্রস্তুতিকে করে তুলবে আরও শাণিত। বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেলেই আমরা বাজারে নতুন মলাটে কিছু পুরানো বই দেখতে পাই....
© ২০১৯-২০২০ সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত NxtOrb দ্বারা।
গেটনোট একটি প্লাটফরম যা চাকরির পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আপনাকে একধাপ এগিয়ে থাকতে আপনার সহায়ক হবে। আপনার প্রস্তুতিকে করে তুলবে আরও শাণিত। বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেলেই আমরা বাজারে নতুন মলাটে কিছু পুরানো বই দেখতে পাই....
© ২০১৯-২০২০ সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত NxtOrb দ্বারা।